মৌখিক পরীক্ষাকে ইংরেজিতে Oral Test বা Viva বলা হয়। ইহার পূর্ণরূপ – Viva Voce। Viva Voce একটি ল্যাটিন শব্দ যার আক্ষরিক অর্থ – “With the living voice”। সব চাকরিতেই ভাইভা নেওয়া হয়। ভাইভা হলো একজন চাকুরি প্রার্থীকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করার অন্যতম মাধ্যম।
ভাইভার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে, যে প্রার্থীকে চাকুরিটা দেওয়া হবে তাকে সরাসরি দেখে পর্যবেক্ষণ করা। মূলত যে পদে একজন প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়, ভবিষ্যতে সেই পদে প্রার্থী কতটা যোগ্য ও পারদর্শী হবেন- এটাই ভাইভাতে পরীক্ষা করা হয়।
ভাইভাতে কম/বেশি প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছেন এর অর্থ এই নয় যে প্রার্থীর ভাইভা খারাপ/ভালো হয়েছে। কারণ ভাইভা কোন ‘কুইজ প্রতিযোগিতা নয় যে, সেখানে ঠিক উত্তরে নম্বর পাওয়া যায় আর ভুল উত্তরে নম্বর কাটা যায়। প্রকৃতপক্ষে একজন প্রার্থী নিজেকে কতটা প্রাণবন্ত ও আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বসম্পন্ন হিসেবে উপস্থান করেছেন- ভাইভাতে সেটাই তার প্রাপ্ত নম্বরে বড় ভূমিকা রাখে।
ভাইভার স্বল্প সময়ে একজন প্রার্থীর নিম্নলিখিত দিকগুলো দেখা হয়:
বিসিএস ভাইভাতে ২০০ নম্বর থাকে। কমপক্ষে ৫০% অর্থাৎ ১০০ নম্বর পেলেই উত্তীর্ণ বলে বিবেচিত হবেন। বিসিএস ভাইভাতে সাধারণত প্রথমে সাধারণ ক্যাডার, তারপর বোথ ক্যাডার, তারপর কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর এবং লিখিত পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর যোগ করে নম্বরের ক্রম অনুসারে মেধাক্রম প্রস্তুত করা হয়। মেধাক্রমে প্রাপ্ত স্থান, ক্যাডার পছন্দক্রম, কোটা এর সমন্বয়ের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদেরকে বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশ করা হয়। যারা উত্তীর্ণ হন কিন্তু ক্যাডার তালিকায় স্থান পান না তাদেরকে নন-ক্যাডার তালিকায় স্থান দেয়া হয় এবং সাথে সাথে তালিকাটির বহাল থাকার মেয়াদসহ এরূপ উল্লেখ করা হয় যে “এ তালিকাটির সকলকে নন-ক্যাডারে চাকুরি প্রদান করা হবে এমন নিশ্চয়তা প্রদান করা হচ্ছে না।” অর্থাৎ নন-ক্যাডারের জন্য সুপারিশকৃতদের মধ্যে স্বল্পসংখ্যক ভাগ্যবান মেধাক্রমে তাদের অবস্থান অনুসারে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ক্রমান্বয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। একটি উদাহরণ প্রায়ই শোনা যায় “একজন পরীক্ষার্থী পরপর ৩-৪ বার বিসিএস মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে নন ক্যাডারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। কিন্তু নন ক্যাডারও ভাগ্য জোটেনি। এর ব্যাখ্যা হিসেবে অনেকে অনেক কিছুই বলে থাকেন। প্রকৃত সত্য হলো তিনি প্রতিবারই লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় একত্রে যত নম্বর পেয়েছিলেন যা ক্যাডার প্রাপ্তির জন্য কম ছিল। হয়তো এখানে নম্বরের স্বল্পতা ১ হতে পারে আবার ১০০ও হতে পারে। তিনি শুধু ৩-৪ বার নয়, ৫-৭ বার মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেও উভয় পরীক্ষা মিলে যদি ক্যাডার প্রাপ্তির যোগ্যতা অর্জন করতে না পারেন তবে তার ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। এমনকি ভালো নম্বর না পেলে কপালে নন-ক্যাডারও নাও জুটতে পারে। সুতরাং পরীক্ষার্থীদেরকে সব সময় স্মরণ রাখতে হবে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার একটি নম্বর খুবই গুরুত্বপূর্ণ।